হাজী মহসীন শেখ:

আলহামদুলিল্লাহ, মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় এবং সকলের দোয়ায় স্বস্ত্রীক পবিত্র ওমরাহ হজ্ব পালন করতে সক্ষম হলাম। সুবহানআল্লাহ্ সে সুবাদে দীর্ঘ ২৫দিনের এ যাত্রায় কাবা শরীফ ও মক্কা শরীফের রহস্যপূর্ণ জায়গাসমূহ দেখার সুযোগ হয়েছে। পবিত্র কাবা ও সাফা মারওয়া তাওয়াফ করেছি বহুবার। বিশেষ করে মক্কায় পবিত্র আল্লাহর ঘর, মক্কা মদিনার হেরাম শরীফের ভেতরে অপরূপ দৃশ্য অবলোকন। জীবনের সবচাইতে বড় আশা পূরণ হলো পবিত্র কাবা তাওয়াফ, হেরাম শরীফে বহুবার নামাজ আদায় এবং সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ পবিত্র মদিনা শরীফে নবীজির রওজা মুবারক দেখে। নবীজির রওজা শরীফের পাশেই হযরত আবু বকর ও হযরত ওমর ফারুক(রা.) এর মাজার দেখেছি দুই নয়ন ভরে। এছাড়া আরবের যে নিদর্শন যাকে একবাক্যে বলা যায় জীবন্ত ইসলাম যেমন- যেখানে পবিত্র কুরআন নাজিল হয়েছিলো সেই উহুদ রোমা পাহাড় দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। সেখানে জিয়ারত করেছি নবীজীর চাচা ইসলামের মহান সেবক ও সৈনিক হযতর আমীর হামজা(রা.) এর কবর। নামাজ আদায় করেছি, মদিনায় পবিত্র মসজিদে কিবলাতাইন, সাত মসজিদ, কোবা দেখার সৌভাগ্য হয়েছে, জিদ্দা শহরের কর্ণিশে মা হাওয়ার কবর, জান্নাতুল মওলা, জান্নাতুল বাকি, আরব সাগর ও জবলে রহমত অর্থাৎ রহমতে পাহাড়, জবনে নুর পাহাড়, জবলে সওর, মসজিদে আয়েশাতে নামাজ আদায়, রহমতে পাহাড়, আরফাতের ময়দান, পবিত্র মিনা শহর ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ইসলামের বিভিন্ন নিদর্শন অবলোকন করতে। মনোরম দৃশ্য অবলোকন করলাম পবিত্র মক্কা থেকে মাত্র ৯০ কি.মি. দূরত্বে শৈল শহর তায়েফ। এছাড়াও সাগরের উপর গড়ে উঠা তৎকালীন বাদশা ফাহাদের সাম্রাজ্য, মক্কার হেরাম শরীফ লাগোয়া বাদশা সালমানে বিশাল রহস্যঘেরা বাড়িটিও দেখলাম।

বন্ধু জুনায়েত কবির চৌধুরীর মালিকানাধীন ‘গ্রিণ ভিলেজ ট্রাভেল এজেন্সি’র মাধ্যমে সহধর্মীনী কামরুন শেখ সহ আমরা দু’জন গত ০১মে রাত দেড়টায় চট্টগ্রাম শাহ্ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানে যাত্রা করি পবিত্র সৌদি আবরের জিদ্দা শহরে। বহুদিনের স্বপ্নের দেশ এবং জীবন্ত ইসলামের দেশে পৌঁছেই যথারীতি আল্লাহর রহমতে মসজিদে আয়েশাতে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে পবিত্র হেরাম শরীফে দুই রাকাত নামাজ আদায় করেই পবিত্র কাবা এবং সাফা ও মারওয়া তাওয়াফের মাধ্য দিয়ে প্রথম ওমরাহ্ হজ্ব পালন করি। এভাবে দীর্ঘ ২৪দিনে চারবার ওমরাহ্ হজ্ব পালন ও বেশ কয়েকবার পবিত্র কাবা শরীফ তাওয়াফ করেছি। দেখেছি ইসলামের বহু নিদর্শন। সর্বশেষ গত ২৪ জুন আমরা প্রিয় জন্মভুমি কক্সবাজারে ফিরে আসি।

প্রতিটি মুসলমানকে সামর্থ্যনুযায়ী পবিত্র সৌদি আরবে হজ্ব অথবা ওমরাহ্ পালন করার নিয়্যাত করা উচিৎ বলে মনে করছি। নিয়্যাত করলে অবশ্যই মহান সৃষ্টিকর্তা তা পূরণ করবে, ইনশাআল্লাহ। পবিত্র আরবে গেলেই দেখা যাবে জীবন্ত ইসলামকে। নি:সন্দেহে ইসলাম শান্তির ধর্ম, যা সৌদিআরবের জীবন্ত ইসলামকে অবলোকন করলেই পরিষ্কার হবে। মজবুত হবে ঈমান।

হে আল্লাহ, সকল মুসলমানকে হেফাজত করুণ, আমীন।

ইনশাল্লাহ্, সকল মুসমান এবং সকল পাঠকের সুবিধার্থে আগামীতে একের পর এক তুলে ধরতে চেষ্টা করবো সৌদিআরবে দেখা ইসলামের একেকটি নিদর্শন ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমূহ।

লেখক: নির্বাহী সম্পাদক, দৈনিক সকালের কক্সবাজার। মোবাইল:- ০১৬১৯০৭০৫১৩